Monday, November 20, 2017

ব্যাকস্পেসঃ একটি কাল্পনিক কথোপকথন

ইভেন্টের সাথে সামঞ্জস্য আছে কি না, বুঝছিনা। থিম, যেটা নিয়ে লিখছি আর কি, সেটাও কিছুই নতুন না। এই ব্যাকস্পেসের আড়ালে জমে থাকে অনেক অনেক অজানা গল্প। অনেক কিছুই আমরা ভাবি, এমনটা হলে বা এমনটা বলতে পারলে, কী ভালোই না হতো। কোন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে মনে হয় রিওয়াইন্ড বাটনটা প্রেস করতে পারলে, অনেক কিছু অন্যরকম ভাবে করা যেত। তেমনই এক কাল্পনিক কথোপকথন তুলে ধরলাম। আপনি আমি সক্কলে কোন না কোন দিন এমন অবস্থায় পড়েছি বা পড়ব যেখানে " কেমন আছিস" এর উত্তরে লম্বা করে নিজের দুঃখের কথা লেখার চেয়ে এক বুক অভিমান নিয়ে "হ্যাঁ, ভালো" বলাটা অনেক বেশী সহজ। নীচের লেখাটিও কিছুটা ওই ধাঁচেরই।


ডিসক্লেমারঃ ইভেন্টের নামের সাথেই ম্যাচ করিয়ে, "সব চরিত্র কাল্পনিক। Any resemblance to any person living or dead is purely coincidental."


এক "ভালো" মেয়ের কথা



- ওই, আমার ওপর রাগ হয়েছে নাকি? কদিন এক্কেবারে কথা বলছিস না যে?

- না না, তোর ওপর রাগ হবে কেন? আমি কে? কী রাইট আছে আমার বল তোর ওপর রাগ করার? তুই কি না এখন সেলিব্রিটি, তোর নামে গোটা মিডল স্কুল ফ্ল্যাট, ফ্যান ক্লাব হয়ে গেলো তোর। সেখানে আমি কে না কে কোন হরিদাস পাল যে তোর ওপর রাগ করব? স্বরলিপিতে যখন তোর এগেন্সটে বিলুরা এত নোংরামি করল, তখন না হয় আমি একটু তোকে সাপোর্ট দিয়েছি। তা দেবো না কেন, তুই কি না আমার এত্ত ভালো বন্ধু। তার মানে তো এই না যে তোর ওপর আমার রাগ করার অধিকার হবে, তাই না? স্বরলিপি ছেড়ে বৈতালিকে এলি, শুরুতে তোকে ব্যান্ডে চান্সই দিলো না। তাতে কী? আমরা একসাথে তারপরে গান গাইলাম, সেই সুবাদে তুই আবার সোলো গাইলি। তখন এত্ত লোকে তোর ওই গান শুনে ফ্ল্যাট হয়ে গেলো। তারপর স্কুল ফেস্টে তোর ওই পারফরমেন্সটা রে, যার জন্য আমি এত গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে পাবলিসিটি করলাম, ওটায় যে অসামান্য সাড়া পেলি, ওই চিয়ারিং করা তো আমার নৈতিক দায়িত্ব ছিল, তাই না? আমি কি না তোর সেই কবেকার বন্ধু, বন্ধুর জন্য এইটুকু করতে পারিনা? করবোই তো, আমি না ভালো মেয়ে? বাবা, এখন তুই কত বড় মাপের সিঙ্গার সংরাইটার বল,কীসব আবার শুকনো খেজুরগুড় হাম্বা গাম্বা লেভেলের গান লিখিস, আমার এইটুকু মাথায় ঢোকেই না। মাঝে মাঝে তো দেখি আবার অনু মলিকের মত ওইসব আরবি পার্সি সব গানের সুর থেকেও অনুপ্রেরণা পাস। সেদিনের তোর ওই গানটারে, ওই যে রে, ল্যাভেন্ডার নিয়ে যে গানটা সেদিন রিলিজ করলি, তার সুরটা তো ভীষণভাবে আমার এক চাইনিজ পিয়ানিস্টের একটা পিসের কথা মনে করাল। তারপরে দেখলাম তোর ভিডিওতে ভর্তি ভর্তি লাইক আর লাভ, কমেন্ট আর শেয়ার। কে জানে, এতজন যখন প্রশংসা করল, এত স্তাবক, সকলে কত বুদ্ধিমান, নিশ্চয়ই খুব মৌলিক হয়েছিল। আমার নেহাত কাঁচা মাথা। এসব বুঝিনি তাই, এপ্রিশিয়েট করতেই পারিনি উল্টে ভাবলাম কিনা তুই টুকলি করেছিস। যাই হোক, সরি রে। না না। এরকম ভাবা আমার ভুল হয়েছে। তোর ওপর রাগ করাটাও ভুল হয়ে গিয়েছিল। এক্সট্রিমলি সরি রে। প্লীজ তোর ফ্যানক্লাবে আমায় স্থান দে, অন্তত পুরনো বন্ধুত্বের খাতিরে? ইয়ে দোস্তি হাম কভি না তোড়েঙ্গে। প্লীজ প্লীজ? জানি খুব ট্যালামার্কা শোনাচ্ছি, কিন্তু কি করব, আমি যে এরকমই, প্যালা হাঁদা গঙ্গারাম। তোর মত চৌকশ থোড়িই। আর রাগ করব না। এবার থেকে সারাক্ষণ তোর স্তুতি গাইবো, তোর ভালোটুকুই দেখবো। পদে পদে আমায় যখন অবহেলা করিস, সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করব। আমি কি না ভালো ভদ্র মেয়ে। আমার কি আর ঝগড়া আসে বল?



(অনেকগুলো ব্যাকস্পেস টেপার শব্দ)

- ধুর, না রে। একটু ব্যস্ত ছিলাম রে। অনেকগুলো পেন্ডিং এসাইনমেন্ট ছিল, ওই নিয়ে...

- তাই বল। ইয়ুটিউবে একটা নতুন গান পোস্ট করেছি এবার। শুনে বলিস কেমন লাগল। আর একটু প্রোমোট করে দিস, পিপলস চয়েসের প্রাইজটা টার্গেট করেছি।

- হ্যাঁ নিশ্চয়ই। ভালো তো হবেই, তুই করেছিস কি না!

- হুম। প্রোমোট করতে ভুলিস না।
- চল বাই।
- বাই।







No comments:

Post a Comment