আজ বিশ্ব বই দিবস। সেই উপলক্ষ্যে কিছু কথা বলতে ইচ্ছে হলো।
প্রিয়
বইয়ের কথা বলতে গেলে কেমন একটা ঘেঁটে যায় সবকিছু। শুরু করেছিলাম বই পড়া
ইংরেজি দিয়ে। এনিড ব্লাইটন তখন তাঁর লেখনশৈলী দিয়ে মুগ্ধ করছেন আমায়। ফেমাস
ফাইভ, নডি, ফাইভ ফাইন্ড আউটার্স, হার্ডি বয়েজ, ন্যান্সি ড্রিউ এরা তখন
আমার স্বপ্নের চরিত্র।
আরেকটু বড় হতে মনে আছে মা ঠাকুমা বাবার সাথে
পাড়ার জাগরণী পাঠাগার যেতাম। পছন্দের বই নিয়ে পড়তাম। ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে
পড়ার জন্য তখনও ইংরেজি বইয়ের ওপর বেশি আকর্ষণ ছিল। তবে মায়ের শাসনের ফলে
তখন ধীরে ধীরে বাংলা বইয়ে ঝোঁক এলো। মতি নন্দী রূপক সাহা সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায় সমরেশ মজুমদার এদের হাত ধরে শিশু সাহিত্যে প্রবেশ। পূজা
বার্ষিকী আনন্দমেলা পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকতাম। ছুটিতে দিদিমার বাড়ি গেলে
গোগ্রাসে গিলতাম শরৎ রচনাবলী। সাথে আবার সমান তালে পড়তাম ঠাকুমার ঝুলি।
আরেকটু বড় হলাম। যা পড়া বারণ, তার ওপর আকর্ষণ বাড়তে থাকল। মা বাবা অফিস চলে
গেলে লাইব্রেরির থেকে তাদের আনা তথাকথিত বড়দের বই, পূজাবার্ষিকী
আনন্দবাজার পত্রিকা দেশ বর্তমান আনন্দলোক পড়তাম লুকিয়ে, খাটের তলায় ঢুকে
গিয়ে, ঠাকুমার নজর এড়িয়ে। ওই প্রথম আমার "পেকে যাওয়া"!!
মাঝে একটা সময়
বই পড়ায় ভাটা এসেছিল। লেখাপড়ার চাপে। তবুও খুচখাচ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
সত্যজিৎ রায় চলতোই। মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে ভালো রেজাল্ট করলে উপহারে
নিতাম বই। এখনো বই উপহার পেতে ও দিতে খুব ভালোবাসি।
এখন বই পড়ি যতটা
সম্ভব। ইংরেজি বেশি। কারণ চেন্নাইয়ে বসে বাংলা বই পাওয়া দুষ্কর। হোস্টেলে
রাখার জায়গা অভাব, তাই বেশির ভাগ বই কিন্ডলে পড়ি। কী করি? একটি অনলাইন
লাইব্রেরির মেম্বারশিপ নিয়েছি আবার। এছাড়া ফেসবুকে বিভিন্ন স্বাদের নানা
লেখা পড়ি। পড়ার হ্যাবিটটা ধরে রাখতে হবে। ইদানিং পড়া একটু কম হচ্ছে, লেখাও
তাই কম আসছে। কটাদিন একটু ব্রেক নিচ্ছি তাই।
আপনাদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা। প্রচুর প্রচুর বই পড়ুন। পড়ান। লিখুন।
সাথে থাকুন সাম্পানের।
No comments:
Post a Comment