শীত গ্রীষ্ম বর্ষা। সোম থেকে শুক্র সুনন্দার এক রুটিন। ভোরবেলা অ্যালার্ম বাজার আগেই উঠে পড়া, কোনোমতে হাত মুখ ধুয়ে রান্নাঘরে দৌড়। আর তারপর ছেলের আর স্বামীর টিফিন, ওদের সকলের ব্রেকফাস্ট বানানো, ওরা বেরিয়ে গেলে রান্নাবান্না সারা। এই করতে করতেই কখন যে দুপুর হয়ে যায়, তখন একটু টুকটাক বই পড়ে বা এঁকে, খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে বা টিভি চালিয়ে অল্পক্ষণের জন্য দুই চোখের পাতা এক হয়ে যাওয়া। আবার বিকেল হতে আবার সবাই বাড়ি ফিরলে তাদের খিদমত খাটা।
আজ
প্রথম ব্যাঘাত ঘটবে আঠারো
বছরের এই সাজানো রুটিনে। এত
বছরের টুকিটাকি আঁকিবুকির
একজিবিশন ওর। শিল্পী সুনন্দার
আত্মপ্রকাশ ঘটবে নতুন করে।
২।
ছোট
থেকেই আর পাঁচটা মেয়ের মতোই গোলাপী রঙ ভীষণ প্রিয়
ওর। মা অফিস চলে গেলে গরমের ছুটিগুলো কাটত ড্রেসিং টেবিলের সামনে মায়ের লিপস্টিক, টিপ, কাজল নিয়ে খেলা। মায়ের শাড়ি পরে মায়ের মতো সাজতে যে কী ভালো লাগতো পিয়ালের। আরো ভালো লাগত খেলনাবাটি নিয়ে রান্না রান্না খেলা।
কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাহায্যে সেদিনের পিয়াল আজ শুরু করতে চলেছে একটা নতুন জীবন, নাম নিয়ে, "পিয়ালী"।
৩।
"ম্যাম, আমিও নাটকে অংশগ্রহণ করতে চাই।" অডিশনে সাড়া ফেলে দেওয়া সাত বছরের কৃষ্ণার আবদারে না করতে পারলেন না নামজাদা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ড্রামার শিক্ষিকা মলয়জা সেন। এই প্রথম, এত বছর পর, "স্নো ওয়াইট অ্যান্ড সেভেন ডোয়ারফ" নাটকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করল কৃষ্ণবর্ণা কেরলকন্যা।
৪।
পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান পাড়ার ক্লাবে। আবৃত্তির প্রতিযোগিতা চলছে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলো কেউ "বীরপুরুষ", কেউ "প্রশ্ন", কেউ বা "পূজারিণী" বলে একের পর এক হাততালি কুড়িয়ে নিচ্ছে। এমন সময় স্টেজে উঠলো আট বছরের রুদ্র। সচরাচর মুখচোরা ছেলেটি চিরকাল তোতলা বলে এর তার থেকে টিটকিরি খেয়ে অভ্যস্ত। এই প্রথম হাততালি কুড়িয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম পাঁচে এলো - নতুন বছরে মায়ের সদা জুগিয়ে যাওয়া সাহস যে ওকে দিয়েছিল এক নতুন আত্মবুশ্বাস।
৫।
নীতিবাগীশ মাস্টারমশাইয়ের মেয়ে রঞ্জা। ছোট থেকেই বাবার আদর্শে মানুষ হয়েছে সে। আর তাই কিছুতেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় গার্ড দেওয়ার সময়ে পরীক্ষার্থীদের "সুবিধে" করতে রাজি হয়নি। ফলে পরীক্ষার শেষ দিনে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ করেই সেই সব "ছাত্রছাত্রী" ও তাদের বাড়ির লোকেদের হাতে নিগৃহীত হয় সে।
আজ মাসখানেক পর আবার রঞ্জা স্কুল যাচ্ছে। আজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। আবার ফিরবে ও পরিদর্শকের ভূমিকায়।
৬।
অভীকের সাথে ব্রেকাপের পর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। এ কদিন তিথি ঘরের বাইরেই যায়নি। রুমমেটরা হাজার চেষ্টা করেও ওকে কলেজে পাঠাতে পারেনি। কিন্তু নাহ, অনেক হল কান্নাকাটি, দোষারোপ। এ ওকে ঠকালো না ও একে, এসবের চুলচেরা হিসেব নিকেশ তো হল। দিনের পর দিন এইভাবে মন খারাপ করে থাকলে আর তিথির চল্বেনা।
মায়ের পাঠানো শাড়িটা পরে খোঁপাটা ঠিক করছে তিথি। এখনো কত সাজগোজ বাকি। এক সপ্তাহ পর আজ ও বেরোবে। পয়লা বৈশাখের শুভদিনে। শুরু করবে জীবনটা নতুন করে।
কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাহায্যে সেদিনের পিয়াল আজ শুরু করতে চলেছে একটা নতুন জীবন, নাম নিয়ে, "পিয়ালী"।
৩।
"ম্যাম, আমিও নাটকে অংশগ্রহণ করতে চাই।" অডিশনে সাড়া ফেলে দেওয়া সাত বছরের কৃষ্ণার আবদারে না করতে পারলেন না নামজাদা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ড্রামার শিক্ষিকা মলয়জা সেন। এই প্রথম, এত বছর পর, "স্নো ওয়াইট অ্যান্ড সেভেন ডোয়ারফ" নাটকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করল কৃষ্ণবর্ণা কেরলকন্যা।
৪।
পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান পাড়ার ক্লাবে। আবৃত্তির প্রতিযোগিতা চলছে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলো কেউ "বীরপুরুষ", কেউ "প্রশ্ন", কেউ বা "পূজারিণী" বলে একের পর এক হাততালি কুড়িয়ে নিচ্ছে। এমন সময় স্টেজে উঠলো আট বছরের রুদ্র। সচরাচর মুখচোরা ছেলেটি চিরকাল তোতলা বলে এর তার থেকে টিটকিরি খেয়ে অভ্যস্ত। এই প্রথম হাততালি কুড়িয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম পাঁচে এলো - নতুন বছরে মায়ের সদা জুগিয়ে যাওয়া সাহস যে ওকে দিয়েছিল এক নতুন আত্মবুশ্বাস।
৫।
নীতিবাগীশ মাস্টারমশাইয়ের মেয়ে রঞ্জা। ছোট থেকেই বাবার আদর্শে মানুষ হয়েছে সে। আর তাই কিছুতেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় গার্ড দেওয়ার সময়ে পরীক্ষার্থীদের "সুবিধে" করতে রাজি হয়নি। ফলে পরীক্ষার শেষ দিনে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ করেই সেই সব "ছাত্রছাত্রী" ও তাদের বাড়ির লোকেদের হাতে নিগৃহীত হয় সে।
আজ মাসখানেক পর আবার রঞ্জা স্কুল যাচ্ছে। আজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। আবার ফিরবে ও পরিদর্শকের ভূমিকায়।
৬।
অভীকের সাথে ব্রেকাপের পর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। এ কদিন তিথি ঘরের বাইরেই যায়নি। রুমমেটরা হাজার চেষ্টা করেও ওকে কলেজে পাঠাতে পারেনি। কিন্তু নাহ, অনেক হল কান্নাকাটি, দোষারোপ। এ ওকে ঠকালো না ও একে, এসবের চুলচেরা হিসেব নিকেশ তো হল। দিনের পর দিন এইভাবে মন খারাপ করে থাকলে আর তিথির চল্বেনা।
মায়ের পাঠানো শাড়িটা পরে খোঁপাটা ঠিক করছে তিথি। এখনো কত সাজগোজ বাকি। এক সপ্তাহ পর আজ ও বেরোবে। পয়লা বৈশাখের শুভদিনে। শুরু করবে জীবনটা নতুন করে।
No comments:
Post a Comment