কোনো ফ্লাইটে জানলার ধারের সীটটা সচারচর রুমুনের ভালো লাগে না। বরং আইলটাই ওর প্রেফারড সীট। কিন্তু ওই যে, পেঁজা তুলোর মধ্যে দিয়ে যখন প্লেনটা নামবে ক্রমশ, নীচে সেই চিরপরিচিত কংক্রিটের জঙ্গল, সরু সুতোর মতো গঙ্গা, কালো ধোঁয়ার আস্তরণ। কাঁচের জানলায় মাথা এলিয়ে দিয়ে তখন দু চোখ ভরে দেখতে ভালোবাসে ও। দীর্ঘ সাত আট ঘণ্টার বিমানযাত্রার শেষে ক্যাপ্টেনের কণ্ঠে "উই আর অ্যাবাউট টু ল্যান্ড অ্যাট দ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ইন কলকাতা" যেন সেই ছোটবেলায় পড়া রূপকথার সোনার কাঠি। রুমুনের মনের মধ্যে তখন বাজতে থাকে ঢাকের ঢ্যাংকুরকুর, বিলিতি পারফিউমকে উপেক্ষা করে নাকে ভেসে আসে ছাতিম ফুলের পাগলকরা গন্ধ। বিদেশি বিমানসংস্থার সীটের কাভারে যেন দেখতে পায় ভোরের শিশির ভেজা সাদা শিউলির ঢেউ।
বিমানবন্দরের হইহই, রাস্তার যানজট, প্রিপেড ট্যাক্সির লম্বা লাইন। কেউ না। কেউ এই মুহূর্তে ওর জীবনে ভিলেন হয়ে আসতে পারবে না। আগামী কটাদিন শুধুই আনন্দ। শুধুই উৎসব।
ঘরে ফিরছে রুমুন। আরো অনেকের মতোই।
শারদোৎসবের আনন্দে মাততে। মায়ের স্নেহে। বাবার আদরে। বন্ধুদের আলিঙ্গনে। সদ্য কেনা শারদীয়ার সাদা কালো অক্ষরে।
এই পুজো সর্বজনীন। এই পুজো সার্বজনীন।
No comments:
Post a Comment