প্রতিদিনের মতোই আজও সকাল আটটায় ঘুম ভাঙে ওর। রেডিওতে প্রিয় মর্নিং শোতে আরজের কথায় খেয়াল পড়ে, আজ যে বসন্ত পঞ্চমী। মনে পড়ে যায় স্কুল কলেজের কথা। হইহই করে প্রিয় হলুদ রঙা শাড়ি পরে "বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে"দেবীর আরাধনা। তারপর কোনোরকমে প্রসাদ খেয়ে টো টো করে বন্ধুরা মিলে বিভিন্ন স্কুলে, গানের স্কুলে যাওয়া।
ও একবার ভাবে, অফিসে কি তাহলে গত খাদি মেলা থেকে কেনা হলুদ প্রিন্টেড সিল্কটা পরবে? ধুর। নতুন অফিস। কলিগদের সাথে ভাব জমেনি এখনো। একা একা শাড়ি পরে গিয়ে লোক হাসাবে? দরকার নেই। হাল্কা মাথা নেড়ে নিয়মমাফিক কুর্তি আর জিন্সে সাজিয়ে নেয় নিজেকে। তবে হ্যাঁ, মায়ের কথা শুনে কুর্তিটা হলুদ হয় বটে।
বাস স্টপে চোখে পড়ে শ্যাম্পু করা এক ঢাল খোলা চুল বা খোঁপার দল। রঙ বেরঙের শাড়ি। পাশে হলুদ লাল কমলা পাঞ্জাবিরা। আর তাদের মান অভিমান হাসি খুনসুটি।
বাসটা থামে স্কুলের স্টপেজে। সিগনালে। চোখে পড়ে, সেই দলে দলে মায়ের শাড়িতে হঠাৎ বড় হওয়া ক্লাস নাইন আর ইলেভেনের দিদিদের ভিড়। আর একটু কোণে, পেট্রোল পাম্পের ধারে সারি দিয়ে দাঁড়ানো পাশের বয়েজ স্কুলের মুগ্ধদৃষ্টিগুলি।
সবই স্মৃতি। সিগনাল লাল থেকে সবুজ হয়। শৈশবকে ফেলে রেখে ও এগিয়ে চলে বর্তমানে। মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয় রয়ে যায় স্মৃতির মণিকোঠায়।
No comments:
Post a Comment