Saturday, September 2, 2017

অল্প ভাঙ্গা গল্প গুলো

- হ্যালো? ব্যস্ত নাকি?
- না বল। আজ এলি না কেন ক্লাসে?
- আরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মা বাড়ি ছিল না, ডাকারও কেউ ছিল না। তাই ক্লাসের টাইম মিস করে গিয়েছি।
- তুই না! কোন মানে হয়?
- স্যার কিছু বললেন?
- না না। এই এত বড় ব্যাচে অত লক্ষ্য করেওনা।
- হুম।
- হুম হুম করিস না। আসলে যে কি জানতে ফোন করেছিস, তা তো আমি জানি। বলছি।
- লাভ ইউ।
- থাক! সর্বত্র অত লাভ বিলি করতে হবে না। ভালোবাসা কি এতটাই সর্বজনীন নাকি?
- উফ, কি ডায়লগ!
- Whatever, সে এসছিল আজ, বটল গ্রীন কালারের টিশার্ট আর ক্রিম কালারের জিন্স পড়ে। দু তিনদিনের না কামানো হাল্কা স্টাবল ছিল গালে।
- Wow! নিশ্চয়ই খুব সুন্দর লাগছিল?
- উম। কাইন্ড অফ।
- আহ মন খুলে না হয় একটু প্রশংসা করলিই।
- বয়ে গিয়েছে। যাক গে। ও হ্যাঁ, একবার জিজ্ঞেস করল তুই আসিসনি কেন আজ।
- সিরিয়াসলি?
- হ্যাঁ।
- অবাক কাণ্ড তো। ভারচুয়ালে এক, রিয়ালে আরেক ব্যবহার?
-  আবার কি হল? খুলে বল।
- আগে ফেসবুকে আমার হেঁজিপেঁজি সব লেখা, ছবি, পোস্টে লাভ দিত, আজকাল দেখি হয় নো রিয়েকশন, নয়তো শুধু লাইক। আর এদিকে ক্লাসে যাইনি বলে খোঁজ নিচ্ছে। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগল না তোর?
- অত সর্বত্র লাভ বিলি করলে চলবে নাকি? লাভ কি এত সস্তা নাকি রে? সব জায়গায় শুধু বিলিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে?
- না তাও।
- শোন তোকে তো কতদিন ধরেই বলেছি, ডেকে কথা বললেই তো পারিস।
- কথা তো বলিই।
- ন্যাকা। যেন বুঝছিস না। এ কথা সে কথা না। 
- সাহস হয় না।
- আরে যতক্ষণ না বলবি, ততক্ষণ এই গুমরে গুমরেই রইবি।
- দ্যাট ইস অলসো ট্রু। স্টিল...
- ব্যাস, এবার স্টিল, সেরামিক বন্ধ কর। নেক্সট ক্লাসে কথাটা পেড়েই ফেল। ঠাকুর ঠাকুর করে কপালে যা আছে, দেখা যাবে।
- হুম। আজকাল দেখছি খুব ওই সঞ্চারীর পোস্টে ঘনঘন লাইক লাভ চলছে। আবহাওয়া ভালো না।
- উফ, আবার তোর ওই লাভ রিএকশন। এই ফেসবুককে এত যে কেন ইম্পরটেন্স দিস।
- তুই বুঝবি না। সুকান্ত দা নেহাত তোর প্রতিবেশী। নইলে দেখতি, তুইও এই ফেসবুক ফেসবুক করেই হেদিয়ে মরতি।
- Whatever...
- হ্যাঁ ছাড়। আছা ওকে ঠিক কি ভাবে বলব?
- যেমন করে কথা বলে! 
- আরে ধ্যাত, তুই তো জানিস, ওর সাথে নরমাল কথা বলতে গেলেই কিরকম বুকের ভিতর ধুকপুকুনিটা বেড়ে যায়।
- এক কাজ করবি, আগেরদিন রাত্রে হাল্কা খাবার খাবি। পারলে দুইদিন নো আমিষ। একটু স্যাক্রিফাইস কর, মন মেজাজ শান্ত থাকবে। ও হ্যাঁ, পারলে একটা দুটো খইয়ের মোয়া খেয়ে নিস।
- খইয়ের মোয়া? এখন কোথায় পাব? ও তো সরস্বতী পুজোয় প্রসাদে দেয়। আর খাবই বা কেন এখন?
- দশকর্মা দোকানে পেয়ে যাবি। সিয়োর। খেলে পরে দেখবি মুখে খই ফুটেছে।
- It was a terrible PJ কিন্তু।
- সে PJ DJ যাই বল না কেন। আমার কথামত চল। দেখবি এস্পার ওস্পার কিছু একটা ঠিক হবে।
- আচ্ছা, কি বলব?
- আমি তোকে ভালোবাসি।
- এ না না। এত স্ট্রেটকাট ভালো না।
- ভণিতা করে কি হবে। সোজা সাপটা যা বলার বলে দিবি। এটা তো রচনা লিখছিস না যে সুন্দর করে ভূমিকা, মূল বক্তব্য আর উপসংহার লিখতে হবে।
- তা বলে এরকম ডাকাবুকো ভাবে আমি তোকে ভালবাসি?
- ম্যাক্স টু ম্যাক্স ওই আগে এই একটু শোন, আর শেষে হ্যাঁ না at your discretion। আর কিচ্ছুটি না। এতে হলে হবে, না হলে না।
- বুঝলাম।
- কি বুঝলি?
- চাপ, জীবনে বেশ চাপ।
- তুই এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা কর, আমি বরং দেখি মা কে রাজি করিয়ে মটন চাপটা আনানো যায় কিনা। আর হ্যাঁ, অল দা বেস্ট। না ছড়িয়ে, কনফিডেন্টলি, ভালো করে প্রোপোজ করিস। এবার রাখলাম।
- থ্যাঙ্ক ইউ। লাভ ইউ।
- ওরে সব লাভ আমায় দিস না, একটু বাঁচিয়ে বুচিয়ে রাখ ছেলেটার জন্য।
- হুম, চল,কাল দেখা হবে। টাটা।
- বাই।


"কি লিখছ বনি? আবার মিচকি মিচকি হাসি। কি ব্যাপার?" সুকান্তর কথায় টনক নড়ল বনির। পেনের খাপটা বন্ধ করে ডায়েরির পাতা থেকে চোখ তুলে তাকিয়ে সে বলল, " পৃথা আর অভির জন্য 15th anniversary special একটা লেখা লিখছিলাম। ওদের আলাপ পর্বের ঠিক আগে আগের ঘটনা। অভিকে এইসব গল্প আদৌ ও বলেছে কি না কে জানে। বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার দৌলতে আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করছি ওকে জানিয়ে। সেইসব দিনের কথা ভাবতে ভাবতে আর কি মনটা ভালো হয়ে যায়, automatically হাসি ফুটে ওঠে।" লেখাটা পড়ে সুকান্ত এক গাল হেসে বনিকে বলল, "এইবারে বুঝলাম কেন তুমি এত insist করছিলে অভির জন্য ওই গ্রীন টিশার্ট আর ক্রিম জিন্স কিনতে। অ। এই ব্যাপার। ভালো, বেশ ভালো।" "হুম, চল এবার রেডি হই। পার্টিটায় তো যেতে হবে, নাকি?"

No comments:

Post a Comment