হোলি হ্যায়!
উফ, আবার শুরু হলো। সবে সকাল দশটা। এর মধ্যেই গোটা কমপ্লেক্স জুড়ে লোকে লোকারণ্য। সুতপার কাছে এই দিনটা একটা বিভীষিকা। চেষ্টা করেছিল ঘরের সব দরজা জানলা বন্ধ করে এসিটা চালিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকবে, যতক্ষণ না এই রঙ খেলার প্রহসন শেষ হয়। মা বাবা অনেকবার করে বলেছিল ওদের সাথে মাসীর বাড়ি ভুবনেশ্বরে যেতে, যাওয়ারও কথা ছিল সুতপার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কাজের দোহাই দিয়ে ছুটি ক্যান্সেল করে দিল বস।
হ্যাঁ, প্রহসনই তো বটে। সারা বছর নোংরা দৃষ্টি দিয়ে ওকে গিলে খায় যে কয় জোড়া চোখ, হোলির দিন "বুরা না মানো, আজ হোলি হ্যায়"এর দোহাইয়ে তারাই বিনা বাধায় হাতের সুখ, মনের সুখ এক করে ফেলে। রঙ এত প্রিয় সুতপার, কিন্তু গত দু বছর ধরে যে মানসিক যন্ত্রণা ওকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে, সেই জন্যই এইবারে ঘরের মধ্যে চুপ করে বসে আছে ও। খুব ইচ্ছে করছিল প্রতি বছরের মতোই এবারেও ও ধবধবে সাদা সালোয়ার কামিজ পরবে, দুই হাত ভরে আবির মাখবে আর মাখাবে সমস্ত প্রিয়জনদের। কিন্তু না, ওই যে আজ, হোলি, বুরা মানা বারণ।
কলিং বেলের শব্দে সম্বিৎ ফিরল সুতপার। এই অসময়ে কে এলো আবার? আইহোল দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে পেলো সেই দুই জোড়া নোংরা চোখ। ধক করে উঠল বুকটা সুতপার।
"হ্যাঁ রে মা, দরজা খোল। রঙ খেলবি না? বুরা মানলি নাকি? আজ তো হোলি রে পাগলি!"
হঠাৎই সুতপার প্রবলভাবে হোলি খেলার ইচ্ছেটা জেগে উঠল। এক ছুটে রান্নাঘর থেকে সদ্য জার্মানি থেকে ওর দাদার পাঠানো বুচার'স নাইফটা নিয়ে ছিটকিনিটায় হাত রাখল ও।
No comments:
Post a Comment