Wednesday, December 12, 2018

শীত ইত্যাদি (সাম্পান)

কবে থেকে খুঁজছি জানেন, কিন্তু পাচ্ছিইনা। মনে হয় শব্দগুলো সব চড়ুইভাতি করতে গিয়েছে। আর নইলে পরিযায়ী পাখিদের সাথে ডানা মেলে উড়ছে এদিক ওদিক। আর নয়তো বলতে পারি, যা ঠাণ্ডা পড়েছে, ল্যাদ মোড অন। লেপ কম্বলের তলা থেকে আমাদেরই বের হওয়া, বড়ই মুস্কিল ব্যাপার। স্কুলগুলোরও তো ছুটি পড়ল বলে। আর হয়তো হাতে গুণে দিন দশেক। তাহলে শব্দগুলোরই বা কী দোষ বলুন তো? ওদেরও তো শখ আহ্লাদ আছে। নাকি?
আমরা যখন তখন নতুন গুড়ের মোয়া, পাটালি খাবো। বড়দিনের স্পেশাল নাহুমের রিচ ফ্রুট কেক খাবো। চিড়িয়াখানায় লুচি আর নতুন আলুর দম নিয়ে গিয়ে পিকনিক করব। বাড়ি বসে ফুলকপির তরকারি, পালং শাক, পাবদা পার্শে খেয়ে একটা ছোট্ট ঢেকুর তুলে ছাদে মিঠেকড়া রোদে বসে কমলালেবুর খোসা ছাড়াব। সাথে থাকবে দুপুর দুটোর আকাশবাণীর নাটক। একটু রোদ পড়তে থাকবে যখন, একটা কনকনে বাতাস হঠাৎ ছুঁয়ে যাবে। বেশ জাপ্টে নেবো শালটাকে।
(আমার আবার শাল নিয়ে রোমান্টিসিজম আছে খুব। মায়ের সাথে নিউ মার্কেট থেকে কাশ্মীরি কাজ করা কালো শাল বা হিমাচল প্রদেশ ঘুরতে গিয়ে কেনা কুলু শাল। বা বন্ধু সোহিনীর কথা অনুযায়ী গুরজারি থেকে কেনা সেই "ভুস্কু" শাল। উফ। কী ওম। কী আরাম। বেশ জড়িয়ে জাপটে আরাম। হ্যাঁ, প্র্যাক্টিকালি ভাবতে গেলে সোয়েটার জ্যাকেট অনেক কনভিনিয়েন্ট ঠিকই। কিন্তু শাল হল আভিজাত্য। ভাবুন তো, শীত মানেই বিয়েবাড়ি। ভারী সিল্কের শাড়ির সাথে কি কোন সোয়েটার চলে? উহু। চাই একটা জম্পেশ শাল। আর যদি পরেন পাজামা পাঞ্জাবি, কাঁধে একটা কাশ্মীরি শাল ঝোলানো কিন্তু মাস্ট! এই দেখুন গিয়ে কী লিখতে বসে কীসব ফ্যাশনের গল্প করে ফেললাম...)
তা যা বলছিলাম। হয়েছে কী, আমার শব্দগুলোও সব আবদার করেছে। ওদেরও শীতের ছুটি চাই। ওরা বেশ উড়ে বেড়াবে। ঘুরে বেড়াবে। এদিক সেদিক। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে। আমি তো আবার দয়ালু মানুষ। ছুটি মঞ্জুর করেই দিলাম। তবে হ্যাঁ, একটু কড়াও হতে হয়। এক্কেবারে প্রথমেই ছুটি দেওয়া যায় না। তাই বলেছি, এক সপ্তাহ কাজ করতে হবে। তারপর যেখানে খুশি যাও। ওরাও মেনে নিয়েছে।
আগামীকাল থেকে তাই এক সপ্তাহ ব্যাপী "কিশলয়" থিমের ওপর গান গল্প কবিতা থাকছে। আর তারপর?
ছুটি ছুটি ছুটি...
কবে ফেরা? দেখি, ওরা কবে ফেরে?
শীত এঞ্জয় করুন।
(এ তল্লাটেও অল্প বিস্তর ঠাণ্ডা পড়েছে বই কি)

No comments:

Post a Comment