Tuesday, December 25, 2018

Christmas 2018

তথাকথিত "ট্যাঁশ" ইংলিশ মিডিয়াম কনভেন্ট স্কুলের ছাত্রী হলেও কোনদিনও ক্রিসমাস নিয়ে আলাদা কিছু করিনি। এমন কি, স্কুলেও যেতাম না এইদিনে। অনেক বন্ধুরা, সিনিয়ররা, জুনিয়ররা যেত, যায়। শুধু ওই দুদিন আগে স্কুল ছুটি পড়ার দিন স্কুলে কোন একজন স্যর স্যান্টা সেজে আমাদের চকলেট দিতেন। খুব মজা লাগত। চকলেট খেতে, পেতে ও কিনতে বড্ড ভালোবাসি, এখনও। আর স্যোশাল সার্ভিস না কী জানি নামে ওই আশে পাশের "less fortunate" (হ্যাঁ, বেশ ডিপ্লোম্যাটিক এবং পোলাইট শুনতে লাগে) পরিবারের জন্য বিস্কিট, জ্যাম, জেলি, ইত্যাদি নিয়ে যেতে হত স্কুলে। ব্যস।
পিকনিক টিকনিক বোধহয় ইউনিভার্সিটিতে ওই দুই বছর ছাড়া আর কখনও যাইওনি। কাজেই আর পাঁচটা পাতি ছুটির দিনের মতোই ক্রিসমাসও কাটিয়েছি চিরকাল। হ্যাঁ, সকালবেলা ব্রেকফাস্ট টেবিলে মামার দিয়ে যাওয়া নাহুমের রিচ ফ্রুট কেক বা বাবার আনা ক্যাথলিন বা মোঞ্জিনিসের ফ্রুট কেকের একটা টুকরো পেতাম। আর সাথে ইউজুয়াল ছুটির দিনের ব্রেকফাস্ট। লুচি, ইত্যাদি। শীত স্পেশাল মোয়া হয়তো...
স্যান্টা বলে যে আদপে কেউ নেই, সেটা অনেক ছোটবেলাতেই জেনে গিয়েছিলাম (বরাবরের ইস্মারট বাচ্চা কি না ), তবুও উম্মি, মানে আমার ঠাকুমার কাছে আবদার থাকত। ক্রিসমাসে একটা গল্পের বই চাইই চাই আমার। বাবা কয়েকদিন আগে অফিস ফেরতা এনে দিত সেই বই। আমার থেকে জেনে নিয়েই, কোন বই আনবে সেই বছর। সব জানি। সকাল সকাল কী পাব, ইত্যাদি। তবুও, কোথাও জানি একটা অদ্ভুত আনন্দ মাখা থাকত ওই শীতের সকালে ঘুম ঘুম চোখে লেপের তলা থেকে হাত বার করে (আমি বাপু বরাবরের শীত কাতুরে। অল্পেই লেপ লাগে। কম্বল লাইজাম্পিতে হয় না) বালিশের নীচ থেকে প্রিয় গল্পের বইটিকে স্পর্শ করতে। নতুন পাতার গন্ধ, সাদার ওপর ওই কালো কালো অক্ষরগুলো আগামী দিনের নতুন বন্ধু... তাদের সাথে বন্ধুত্ব পাতানোয়।
তারপর একদিন বড় হলাম। উম্মিও চলে গেল। ক্রিসমাসের উপহার বলে আর কিছু রইল না। এখন যখন খুশি যবে খুশি যা ইচ্ছে বই কিনতে পারি। কিনি। পড়ি। তবু, গিফট পাওয়ার চার্ম রইল না আর।
থুড়ি, ছিল না। তারপর দুই বছর আগে আমার জীবনে এলো এক নতুন স্যান্টা। আমাদের সকলের আদরের সায়ন্তী। ব্যক্তিগত চিঠিপত্র অনুভব অনুভূতিগুলো যখন whatsapp আর facebookএর emojisএর পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, এই মেয়েটি নিয়ম করে প্রতি বছর hand written note আর আমার প্রিয় চকলেট রেখে যায় আমার জন্য। এবং ঠিক রাত্তিরবেলা, চুপি চুপি, আমার হোস্টেলের দরজার বাইরে। যাতে সেই ছোটবেলার মতোই সকাল সকাল ওই একই রকম আনন্দ পাই।
এই বছরও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। স্যান্টা, নাকি সায়ন্তী (দেখ, নামে কী মিল!) অনেক অনেক ভালোবাসা এই উপহারের জন্য।
বিঃ দ্রঃ এবারের নোটটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিস কিন্তু!
ভালো থাক, ভালো রাখ।

No comments:

Post a Comment