Friday, December 20, 2019
3
মায়ের শাড়ি শাল ধার করে বিয়েবাড়ির সাজগোজ সম্পূর্ণ করলো রুমুন। আজ ছোটবেলার প্রিয় বান্ধবী, কস্তুরীর রিসেপশন। মা বাবারও নেমন্তন্ন রয়েছে, তবে ওঁরা যাচ্ছেন না। মাকে সাজটা দেখাতে গেলো রুমুন। অবশ্য মায়ের যে কী রিঅ্যাকশন হবে, সেটা মোটামুটি ও জানতো। মায়ের মুখ গম্ভীর। বক্তব্য এই যে, সব্বাই দিব্যি বিয়ে করে থিতু হয়ে যাচ্ছে। ও কবে করবে। মা বাবাকে এখনও পুরো ব্যাপারটা ভালো করে বলেইনি রুমুন। তাই ওঁরাও দ্বিধায়, দ্বন্দ্বে। অবশ্য, বলবেই বা কী? ও কি নিজেই আদৌ জানে? অগ্নির সাথে সম্পর্কটা এখন কোথায় গিয়ে যে দাঁড়িয়েছে...
বিয়েবাড়িতে ভারী মজা হলো। বরপক্ষের বেশ কিছু নিমন্ত্রিতদের সাথে বিয়ের দিনেই আলাপ হয়েছিল রুমুনের। বিশেষ করে বাসর রাত জাগার সময় সবাই মিলে দারুণ আনন্দ করেছিল। আজ বৌভাতের অনুষ্ঠানেও সেই আলাপ ঝালিয়ে নিয়েছিল রুমুন আর ওর বাকি বান্ধবীরা। তাই সন্ধ্যের অনুষ্ঠানেও খাতির যত্ন আলাপ আড্ডা কোনটারই অভাব হলো না। বরের বন্ধুদের মধ্যে সঙ্কল্প বলে ছেলেটি, ডাক্তার, বেশ মিশুকে। তার সাথে রুমুনের ভালোই বন্ধুত্বপূর্ণ খুনসুটি চলেছে। বাসরের রাতে গান বাজনাও ভালোই হয়েছে। রিসেপশনে দেখা হতেই এক গাল হাসি। "বাঃ, তোমাকে তো বেশ লাগছে দেখতে!" রুমুন একটু ব্লাশ করেই ধন্যবাদ জানায়। বান্ধবীরা কিন্তু কেউ মিস করেনি এই কথা। সারা সন্ধ্যে তারা লক্ষ্য করে গেলো, সঙ্কল্প যেন রুমুনের চারিদিকেই থাকার সঙ্কল্প নিয়েছে। কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। সারাক্ষণ ওদের সাথেই রইলো। একসাথে ছবি টবিও উঠলো। হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ারও হলো, স্টেটাসও হলো।
ফিরতি পথে রুমুন আর ঋত্বিকা একটা ওলা ধরলো। ঋত্বিকা জমিয়ে রুমুনের পিছনে লাগতে থাকল। "কী রে, তাহলে সঙ্কল্প?"
রুমুন একবার তাকায় বান্ধবীর দিকে, কিছু বলেনা। কিন্তু বান্ধবী, সেই কোন ছোট্টবেলার। মুখ চোখ দেখেই বুঝে যায় সব। বলে, "এখনও মিটলো না তোদের?" রুমুন মাথা নাড়ে উত্তরে। ঋত্বিকা প্রশ্ন করে, "তোদের হলো টা কী?" রুমুন বলে, "জানি না রে। আই অ্যাম স্টিল সারচিং ফর অ্যান আনসার।" ঋত্বিকা কথা বাড়ায় না। শুধু বন্ধুর হাতটা স্নেহের পরশে চেপে ভরসা জোগায়। ওর বাড়ি এসে গেলে, ও নেমে পড়ে। রুমুন চলতে থাকে ক্যাবে।
ক্যাবে তখন বাজছে
"Kaisi Teri Khudgarzi
Na Dhoop Chune Na Chhaaon
Kaisi Teri Khudgarzi
Kisi Thor Tike Na Paaon...
Ban Liya Apna Paigambar
Tar Liya Tu Saat Samandar
Phir Bhi Sookha Mann Ke Andar
Kyun Reh Gaya
Re Kabira Maan Jaa
Re Faqeera Maan Jaa
Aaja Tujhko Pukaare Teri Parchhaaiyan
Re Kabira Maan Ja..."
একবার ফোনটা হাতে বের করে। হোয়াটসঅ্যাপে খোলে অগ্নির চ্যাটটা। মেসেজ করবে? কী লিখবে?
বোঝে না। আবার ফোন বন্ধ করে ব্যাগে রেখে দেয়।
****************
অগ্নি প্রতিদিনের মতো চ্যাট উইন্ডো দেখে। রুমুন অনলাইন। অপেক্ষায় থাকে মেসেজের। আসে না...
#রুমুন_অগ্নি
#সীজন২
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment