Thursday, December 19, 2019
(২)
"কীরে, চুপ করে বসে কেন? ফোনের অপেক্ষা নাকি?" বন্ধু অমৃতর ডাকে অগ্নি পিছন ফিরে তাকালো। মাথা নেড়ে না বললো ও। ফোন? কেই বা করবে? বাবা মা জানে ওরা এখন পার্টি করছে। আজকের মত কথা হয়ে গিয়েছে। আর করবে না। অফিসের কলও নেই। উইকেন্ড মোডে সকলে। কেই বা আর করবে ওকে ফোন?
কোরমঙ্গলায় অমৃতর ব্যাচেলর্স প্যাডে আজ ওদের পাঁচ বন্ধুর গেট টুগেদার। অমৃত, অগ্নি, শুভঙ্কর, পল্লব আর সম্রাট। সেই স্কুলবেলার বন্ধু। আজ কর্মসূত্রে একেক শহরে একেকজন। অনেকদিন পর ওরা পঞ্চ পাণ্ডব এক হয়েছে। উদ্দেশ্য তাই আজ সারা রাত জেগে চুটিয়ে গল্প, আড্ডা। অমৃতই সমস্ত আয়োজন করেছে। সকাল থেকে ফ্ল্যাটটা সাজিয়েছে আলো দিয়ে। খাবার দাবার আনানো হয়েছে। পানীয়ও রয়েছে। গল্পের ফোয়ারা বইছে। স্পিকারে বেজে চলেছে পরপর কিছু রেট্রো গান। কিশোর আশা লতা রফি মান্না।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে উইস্কির গ্লাস হাতে অন্যমনস্ক হয়ে বাইরে তাকিয়েছিল অগ্নি। দূরে ব্যাঙ্গালোর শহরের ঝাঁ চকচকে রাস্তা, স্ট্রিট লাইট, ঝড়ের বেগে ছুটে চলা গাড়ি। এমন সময়ে কানে এলো, আশা ভোঁসলে গাইছেন,
"তু রুঠা তো ম্যায় রো দুঙ্গি সনম
আজা মেরে, বাহো মে আ।।"
মুহূর্তে একটা পরিচিত কণ্ঠের কাতর অনুনয় মাখা হোয়াটসআপ ভয়েস নোট মনে পড়ে গেলো। ফোনে ঢুকেছিলো গত সপ্তাহে। হ্যাঁ। ঠিক গত বৃহস্পতিবার, রাত দশটা পঁচিশে। যেই মেসেজটি রোজ কম করে অন্তত দশবার শোনে ও। অথচ, মেসেজের রিপ্লাই দেয়নি।
"কীরে অগ্নি, ভিতরে আসবি না? বাইরে কেন? আয়।"
এইবারে আর সম্রাটের ডাককে অগ্রাহ্য করেনা অগ্নি। হাতের মুঠো থেকে ফোনটা পকেটে ভরে রেখে ঘরে ঢোকে। হোয়াটসআপটা খোলাই থেকে যায়।
কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসে রুমুন হাঁ করে তাকিয়ে থাকে চ্যাট উইন্ডোতে। 'অনলাইন'। কিন্তু 'টাইপিং' আসে না।
#রুমুন_অগ্নি
#সিজন২
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment