১৫।
অ্যানা বাড়ি ঢুকে সটান নিজের ঘরে চলে গেল। বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে রইল সারাদিন। ভয়ানক অসুস্থ বোধ করছিল ও। সন্ধ্যের দিকে একবার পিটার এসেছিল ওর সাথে দেখা করতে, কিন্তু ও তখনও বিছানায়।
"ঠিক আছে। আমি কাল এসে অ্যানার সাথে দেখা করে যাবো।" অ্যানার মাকে এই বলে পিটার চলে গেল।
অ্যানা সেই রাত্রে ঘুমোতে পারল না।
সারারাত জ্বরে ঠকঠক করে কাঁপতে লাগল ও। পরেরদিন, অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর, অ্যানার মা ডাক্তার ডাকলেন মেয়ের জন্য।
ডাক্তার রুগীকে দেখে বড়ই চিন্তিত বোধ করলেন।
"আমি ভালো বুঝছিনা অ্যানার কী হয়েছে। কিছুই ঠাহর করতে পারছিনা। আমি বরং আবার বিকেলে আসবো।" এই বলে ডাক্তার চলে যান।
বিকেলে কথামতো আবার পিটার এলো অ্যানার সাথে দেখা করতে। বেচারি অ্যানা তখন বড়ই অসুস্থ, কথা বলার ক্ষমতাটুকুও নেই। পিটার শান্ত হয়ে অ্যানার বিছানার পাশে বসে রইল, ওর হাতে হাত রেখে।
সন্ধ্যে সাতটার দিকে রাস্তায় একটা হইহট্টগোল শোনা গেল। পিটার জানলার ধারে গিয়ে দেখল লোকজন ছোটাছুটি করছে, দৌড়চ্ছে। ও অ্যানাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামল।
"আগুন! আগুন! দ্য কর্নার শপে বড় আগুন লেগেছে।" লোকের গলা পেল ও।
দোকানের কাছাকাছি গিয়ে দেখল বিশাল বিশাল আগুনের শিখা দ্য কর্নার শপকে গ্রাস করছে। লেলিহান শিখায় প্রায় আর কিছুই দেখা যাচ্ছেনা।
"ডেভ কোথায়? ওই তো ডেভের গাড়ি বাইরে রয়েছে। তার মানে ডেভ ভিতরে আছে।" কেউ মন্তব্য করলেন।
আর তারপর তাঁরা সকলে ডেভকে দেখলেন। ডেভ জানলার ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
"লাফ দাও ডেভ। নিজেকে বাঁচাও।" সকলে বলতে লাগলেন।
কিন্তু ডেভের কোন হেলদোল নেই। উনি জানলার ধারে হাসিমুখে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন।
কিছু মহিলারা চিৎকার করতে থাকলেন।
মিস্টার হার্ট দোকানের দিকে ছুটতে গেলে বাকিরা ওঁকে আটকান। দোকানে তখন আগুনের শিখা আরো বড় আকার নিয়েছে। উডএন্ড বাসীরা দেখল ডেভ স্লাটিন দাঁড়িয়েই রয়েছেন, অনড়, অচল। সেই শেষ দেখা। আর কখনও ডেভ স্লাটিনকে কেউ দেখেননি।
পিটার ফিরে গেল অ্যানার বাড়ি। ডাক্তার তখন অ্যানার মায়ের সাথে নিচে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত, চিন্তিত।
ওপরতলা থেকে এক বিকট চিৎকারে সবাই চমকে উঠল। ওরা ওপরে দৌড়ে পৌঁছল অ্যানার ঘরে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। অ্যানা আর নেই।
No comments:
Post a Comment