৮।
পরের দিন অ্যানা ও পিটার গেল মিস্টার হার্টের বাড়ি, ফুটবল ম্যাচ দেখতে। সব মিলিয়ে জনা দশেক অতিথি নিমন্ত্রিত ছিলেন। অ্যানা খেলা দেখে না, তাই ও টিভির ঘরে না থেকে মিসেস হার্টকে রান্নাঘরে সাহায্য করছিল। ওরা যখন চা বানাচ্ছিল, পিটার মাঝে মাঝে এসে অ্যানাকে খেলা দেখতে ডেকে যাচ্ছিল। প্রতিবারই অ্যানা না করছিল। ওর তো খেলায় তেমন উৎসাহ নেই।
"এসে খেলাটা দেখতে পারতে অ্যানা, সবাই খুব উপভোগ করছে। দারুণ ম্যাচ চলছে।" পিটার বলল হাফ টাইমের সময়ে।
"না না ঠিক আছি আমি এখানে। মিসেস হার্টকে সাহায্য করি একটু। তুমি একটু সকলের চা টা নিয়ে যাবে পিটার?" অ্যানা জিজ্ঞেস করল।
চায়ের ট্রে হাতে নিতে নিতে পিটার বলল, "ঠিক আছে, যা বোঝো। এদিকে কিন্তু মাইক বেলি খুব ভালো খেলছে। ইতিমধ্যেই একটা গোল করেছে। মনে হয় ওর দলই জিতবে আজ।"
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হল। মাইক বেলি আরো একটি গোল করল। দল ২-০তে এগিয়ে রয়েছে। সকলে দারুণ উত্তেজিত। এর মধ্যে অপর দল আবার পরপর দুটো খুব দ্রুত গোল করে ফেলল। সমর্থকরা স্তম্ভিত। এবারে ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। খেলা শেষ হতে আর পাঁচ মিনিট বাকি। সকলেই প্রচন্ড উত্তেজিত।
"চলো মাইইইইইইইইইইক, গোল করো।" পিটার উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করল। আর হলোও তাই। ঠিক খেলা শেষ হওয়ার আগে মাইক করল ম্যাচে ওর তৃতীয় গোলটি। কিন্তু অবাক কাণ্ড, এই গোলের চোটে প্রতিপক্ষের গোলকিপার আহত হলেন। গলায় বল জোরে লেগে তার ঘাড় ভেঙ্গে গিয়েছে। বেলি গোলপোস্টের খুব কাছে ছিল আর বলটা মেরেওছিল সজোরে। মিস্টার হার্টের ঘরে উপস্থিত সকলে "এই রে, কী কাণ্ড দেখো" বলে চেঁচিয়ে উঠলেন।
"কী হল? কী হল?" বলে মিসেস হার্ট আর অ্যানা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এল।
"ম্যাচটা তিন গোলে মাইকের দল জিতেছে। কিন্তু অন্য দলের গোলকিপার গুরুতর আহত।" মিস্টার হার্ট জবাবে জানালেন।
ম্যাচ শেষের পর টিভি স্টুডিও থেকে সম্প্রচার শুরু হল। অ্যানাউন্সার মাইকের ইন্টারভ্যু নেওয়ার চেষ্টা করলেন। বার বার মাইককে তৃতীয় গোলটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন। মাইক বেলি বিধ্বস্ত। স্তম্ভিত। স্তব্ধ। ওর মারা বল থেকে যে এরকম একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাবে, অভাবনীয়। টিভির স্ক্রিনে বারবার ওই গোলটিই দেখিয়ে যাচ্ছিল।
ইন্টারভ্যু শেষ হতে মিস্টার হার্ট টিভি বন্ধ করলেন। এর মধ্যে কেউ খেয়ালই করেননি কখন যে অ্যানা ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। মাইক বেলিকে টিভির পর্দায় ভীষণ ভীত লাগছিল। পর্দার এপারে অ্যানাও ভীত, সন্ত্রস্ত। মাইক বেলিকে ও চেনে। ওর সাথে অ্যানার পরিচয় ঘটেছে সম্প্রতি। গতকাল, দ্য কর্নার শপে।
No comments:
Post a Comment