Wednesday, March 11, 2020
রঙ রুট
সুচেতনা
(১)
"শোনো, আমি বেড়াতে যাব। আমার একটা চেঞ্জ দরকার। খুব।" বাড়ি ঢুকেই প্রথম কথা জাহ্নবীর। জাহ্নবীর মা, সুভদ্রা, উনি অবশ্য এই ধরণের কথায় তেমন আর বিচলিত হন না আজকাল। মেয়ের এই যখন তখন হঠাৎ করেই এইসব বক্তব্য, এসবে তিনি অভ্যস্ত। নির্ঘাত জাহ্নবী ফেসবুকে কোনো বন্ধুর পোস্ট দেখেছে, কোথাও ঘুরতে টুরতে গিয়ে ছবি দিয়েছে। আর ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের উঠলো বাই তো কটক যাই। তবে এই কটক যাওয়াটা অবশ্য আজ অবধি শুধুমাত্র বলা অবধিই সীমাবদ্ধ থেকেছে। নইলে যে হারে জাহ্নবী একেকদিন অফিস থেকে ফিরে ওই "বেনারস যাবো। আজ ত্রিপর্ণার প্রোফাইলে অসাধারণ আরতির ছবি দেখলাম। ওর চেয়ে ঢের ভালো ছবি আমি তুলতে পারবো" বা "মা, চলো লাদাখ যাই। কী অসাধারণ সিনারি গো মা" বা "মা মা, লাস্ট টাইম তো দেখো কানহা গিয়েও বাঘের দেখা মিলল না। চলো না, সরিস্কা যাই। শিয়র শট বাঘের দেখা মিলবেই" করে, এতদিনে সব যদি সত্যিই ও যেত, অফিসের পাওনা ছুটি আর ব্যাংক ব্যালেন্স, দুইই ফাঁকা গড়ের মাঠ হয়ে যেত। জাহ্নবী কাজপাগল মেয়ে। সারাক্ষণ কিছু না কিছু নিয়ে মেতে থাকতে এতই ভালোবাসে, আর অফিসে ওর সুপারভাইজার এই ব্যাপারটা এতটাই ভালো বুঝে গিয়েছেন যে, সারা অফিসের সব দায়িত্বই প্রায় জাহ্নবীর ঘাড়েই পড়েছে। অমুক মিটিং, জাহ্নবী প্রেজেন্ট করবে, তমুকের সেলস কল, জাহ্নবী হ্যান্ডেল করবে। অমুক ডেটা চাই, ওই তো, জাহ্নবী আছে তো। এই করে করে বেশিরভাগ শনি রবিও জাহ্নবীর অফিসে গিয়ে বা ওয়ার্ক ফ্রম হোম দিয়েই কেটে যায়। কিন্তু তবুও, মেয়ের এদিক ওদিক ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে, ষোলো আনা। আর তাই রোজের এই এখানে যাবো আর ওখানে যাব, এই ফিরিস্তি শুনতে হয় সুভদ্রাকে। সুভদ্রা আজকাল পাত্তা দেন না। শুনেই যান। আজকের এই ডিক্লারেশনকেও সেরকমই ভেবে উড়িয়ে দিয়ে রান্নাঘরে চললেন, মেয়ের জন্য চা করতে। কিন্তু এইবারে যে ব্যাপারটা একটু অন্যরকম, এইটা বুঝলেন মেয়ের পরের কথায়।
(ক্রমশ)
পুনশ্চ: চেষ্টা করবো রোজ লেখার। তবে এইটুকুই। চাইলে একসাথে পুরোটা পড়তে পারেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment