ভালোবাসা তোকে দিলাম ছুটি ২
- ম্যাডাম আসতে পারি?
- আরে নিতাই দা যে। আসুন আসুন। বসুন। কেমন আছেন বলুন।
- ভালো আছি। আপনি ভালো? স্যার?
- হ্যাঁ হ্যাঁ সবাই ভাল।
- একটা দরকারে এসছিলাম আপনার কাছে ম্যাডাম।
- হ্যাঁ বলুন নিতাই দা। কি দরকার?
- আচ্ছা আপনাদের তো গারমেন্ট এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যাপার। কোন লেদারের এক্সপোর্ট ইমপোর্টের জানাশোনা আছে কেউ?
- কেন কি ব্যাপার নিতাই দা?
- আসলে আমাদের কোম্পানী একটা বিরাট বড় অর্ডার পেয়েছে। একটা বিদেশী কোম্পানীর থেকে। সেই জন্য আর কি আমরা লোক খুঁজছি।
- একটু ডিটেলে বলবেন? আসলে আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এস ডি এন্টারপ্রাইজ এখন এস ডি এক্সপোর্ট নামে আরেকটি কোম্পানি খুলেছে। আমরা লেদারেরও লেনদেন করি।
- ও তাই? কিন্তু আসলে আমাদের অনেকটা বড় অর্ডার। আপনারা আদৌ সামলাতে পারবেন?
- আপনাদের কি দরকার, বলুন। আমরা দেখি।
- বেশ তো, তাহলে একটা মিটিং ফিক্স করা যাক। একদম সামনাসামনি গুছিয়ে বসে ডিল করা যাবে।
- সেই ভালো। পরশুদিন আসুন? আমরা লাঞ্চে মিট করে ঠিক করি?
-ডান। আপনারা এতদিনের পরিচিত। আপনাদের সাথে কাজ করতে পারলে খুবই ভালো লাগবে।
*********************************************************************************
- নিতাই দা আসুন।
- স্যার ম্যাডাম আপনারা বুঝি অনেকক্ষণ এসেছেন? সরি একটু দেরী হয়ে গেল। রাস্তায় খুব জ্যাম ছিল।
- না সে ঠিক আছে। ওটা বুঝি আমরা।
- থ্যাঙ্ক ইউ। আচ্ছা আলাপ করিয়ে দিই। ও সিদ্ধার্থ, আমাদের কোম্পানীর সিনিয়ার ম্যানেজার সেলস। ওই আপনাদের ব্রিফ করবে কি কি দরকার ঠিক আমাদের।
- আচ্ছা বেশ তো। বলুন। কথাবার্তা শুরু করা যাক।
- আরে তুমি কি গো? ভাল কাজ শুরু করতে চলেছি, মিষ্টিমুখ হবে না আগে? একটু কিছু অর্ডার করি।
- আমাদের জন্য শুধু জুস। একবার একসাথে কাজ শুরু হোক, তারপরে মিষ্টি হবেখন।
- বেশ। বলুন।
- প্রথমেই বলুন, আপনাদের কোম্পানীর এনুয়াল টার্নওভার কত?
- দেখুন আমাদের ছোট কোম্পানি, ওই ৩০ লাখের বেশী কখনো হয়নি।
- নিতান্তই ছোট। আমাদের যতটা দরকার, জানিনা, পারবেন কিনা। আমাদের মোট ১ কোটি টাকার ডিল করতে হবে।
- আপনি চিন্তা করবেন না স্যার। ওটা ঠিক হয়ে যাবে। আপনি আমাদের ওপর ভরসা রাখুন।
- ঠিক আছে শৌণক বাবু। আগে আপনারা পুরোটা শুনে দেখুন। তারপরে আপনাদের আমি এক সপ্তাহ টাইম দেব। তার মধ্যে একটা ব্লু প্রিন্ট চাই কিভাবে এগোনোর প্ল্যান করছেন। যদি আমাদের বোর্ডের পছন্দ হয়, তাহলে আমরা ডিল ফাইনালাইজ করব। বুঝতেই পারছেন এত টাকার ব্যাপার, হেলাফেলা করা যায়না।
- হ্যাঁ সে তো অবশ্যই সিদ্ধার্থ বাবু। আপনি বলুন।
- হুম। শুনুন। ..................
*********************************************************************************
- তুমি হুঠ করে তো বলে দিলে যে পারবে। এবার এতগুলো টাকার আয়োজন করবে কি করে?
- ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেব। দেখো দীপু কোম্পানির যা হাল, এইরকম একটা বড় অর্ডার না পেলে আমরা কিন্তু আবার ডুবে যাব। কাজেই এই ডিলটা ক্র্যাক করতেই হবে। যেনতেন ভাবে। তার জন্য তোমায় যদি ওই সিদ্ধারথর সাথে শুতেও হয়, তাও শোবে। KM World খুব নামকরা কোম্পানি। আমি খোঁজ নিয়েছি।
- কে দেবে তোমায় এত লোন? আগেরবারের ট্র্যাক রেকর্ড দেখে কোন ব্যাঙ্ক সাহস পাবে না।
- আরে ব্যাঙ্কে আমার চেনাজানা আছে। ফেলো কড়ি মাখো তেল। একটা কাট মানি নেবে, কিন্তু ঠিক লোন স্যাঙ্কশন হবে।
- দেখো হলে তো খুবই ভালো। ভাল লাভ হবে। ফ্ল্যাটটা তাহলে বুক করতে পারব আমরা। এই গলির মধ্যে যেন আর থাকতে পারছিনা।
- বুঝি দীপু। আমিও তো আমাদের সুখের কথা ভেবেই চেষ্টা করছি। ডিল হলে শুনলে তো, ২০ লাখ এডভান্স। সেটা দিয়ে দিব্যি ফ্ল্যাটের প্রথম কিস্তি হয়ে যাবে।
- তুমি কালকে সক্কাল সক্কাল ব্যাঙ্ক যাবে।
- উহু। আমি না দীপু। যাবে তুমি।
- আমি? আমি পারব বলে মনে হয় না।
- তুমিই পারবে দীপু। লোন সেকশনে যিনি আছেন, সে ব্যাটার মিড লাইফ ক্রাইসিস চলছে। তুমি সেই মত বুঝে শুনে যেয়ো। কাজ হাসিল হবেই।
- এমন করছ যেন কাটতি নেবে না!
- নেবে না না। কম নেবে। টাকা ছাড়া কিছু হবেনা।
- ঠিক আছে। আমি কালই যাব।
*********************************************************************************
- হ্যাঁ দীপু, বল।
- হুম, কথা হল। বুড়োর তো হেবি রস গো।
- আয় এম সরি, আমার জন্য তোমায় এসব করতে হচ্ছে। দেখো, একটু ব্যাবসা সামলে নিই, আর তোমায় দিয়ে এসব করাবো না।
- শৌণক সেসব পড়ে হবে। আগে কথাটা শোনো। বুড়ো বলছে এমনি রেট ১০%, আমায় নাকি স্পেশাল ডিস্কাউন্টে ৭.৫%এ দেবে। মানে সাড়ে সাত লাখে করে দেবে।
- স্কাউন্ড্রেল। দাঁড়াও না। ও ব্যাটা কোনদিন জেলে যাবে। খাঁই বেড়ে গিয়েছে বড়, আগে ২% নিত। এখন এত। মরণ ঘনিয়ে এসছে।
- শোনো যেখানে এত টাকার ডিল, এইটুকু খসাতে হবেই। চিন্তা করে লাভ নেই। বলেছে টাকাটা হাতে পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোন স্যাঙ্কশন লেটার এসে যাবে। সেটা দেখালে কিন্তু সিদ্ধার্থ বাবু ডিল সাইন করে দেবেন। তেমনি তো বলেছিলেন।
- হুম। কিন্তু এই মুহূর্তে সাড়ে সাত কোথায় পাব ভাবছি।
- কেন? কম্পানির কি একেবারে হাড়ির হাল নাকি?
- প্রায় তাই। তিনটে পেমেন্ট আটকে আছে এই জি এস টির চক্করে।
- অন্য কথাও থেকে লোন করবে?
- কি এসেট আছে আমাদের যে কেউ হুঠ করে অত টাকা লোন করবে?
- তাহলে?
- একটা উপায় অবশ্য আছে।
- কি?
- সোনার মুর্গি।
- কৌশাণি?
-ইয়েস!
- তুমি কি পাগল হলে নাকি?
- কেন?
- আগেরবারের ১৮ দিয়ে যে ঠকান ঠকেছে ও, তুমি কি করে ভাবছ যে ও আবার টাকা দেবে?
- শোনো, সে আমার ওপরে ছেড়ে দাও। স্কুল কলেজ জুড়ে স্টেজ কাঁপিয়ে নাটক করেছি। এইটুকু পারব না, হয় নাকি?
********************************************************************************
- অনলাইন আছে দেখছি, পিং করি।
- দুগগা দুগগা!
ওয়াটস্যাপঃ
- মৌ, কেমন আছ?
- শৌণক আবার? এবার কত টাকা চাই তোমার বল?
- প্লীজ মৌ, আমায় ক্ষমা করে দাও?
- তোমার লজ্জা করে না? আগেরবারে একটা ছোট্ট বাচ্চার নামে মিথ্যে বলে এতগুলো টাকা আমার থেকে নিলে। আবার এখন কেমন আছ বলে মেসেজ?
- আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছিলাম মৌ।
- মৌ প্লীজ। একটা লাস্ট চান্স দাও আমায় শুধরোনোর।
- কি চাও তুমি বল?
- আমার ব্যাবসাটার অবস্থা ভালো না। এদিকে দীপুর সিভিয়ার এনিমিয়া হয়েছে। গত মাসে একটা মিসকেরেজ হয়ে গেল। ওর চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ হচ্ছে। তাই তোমার থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য চাই।
- না শৌণক, আমি একই ভুল বার বার করিনা। আমি তোমায় বিশ্বাস করি না। প্লীজ আর আমার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করোনা।
- যাহ্ শালা। পাখী চালু হয়ে গেছে!
- কি বলল দেবে না?
- হুম।
- দাঁড়াও আমি দেখি।
ওয়াটস্যাপঃ
- কৌশাণি দিদি আমি দীপান্বিতা। শৌণক তোমায় আসল সত্যিটা পুরো বলেনি।
- শোনো আমি তোমাদের এই ছকবাজিতে আর থাকতে চাই না।
- দিদি বিশ্বাস করো প্লীজ। আমার চিকিৎসার পিছনে জলের মত টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে শৌণক অসুস্থ। ই সি জি করে ডাক্তার বলেছেন একটা এঞ্জিওপ্লাস্টি করতে হবে ইমিডিয়েটলি। টাকার অভাবে করাতে পারছিনা। বাজারে আমাদের অনেক দেনা। নতুন করে কেউ ধার দিচ্ছেনা। পুরোনো পাওনার টাকা আটকে আছে। এই সময়ে তুমি ছাড়া কে বাঁচাবে আমাদের বল?
- এক বছরে পুরো টাকাটা উড়িয়ে ফেললে?
- দিদি প্লীজ। ওই টাকা আগের দেনা চুকাতে গিয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি দিদি, আমার মাথার দিব্যি। প্লীজ এবারে সাহায্য করে দাও। পুরো টাকা শোধ করে দেব। সময় লাগবে, কিন্তু দেবই। টাকাটা না পেলে যে শৌণক হয়ত আর...
-ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের একটা কপি আমায় পাঠাও। আমি দেখব।
- পাঠাচ্ছি দিদি।
- এই শিগগিরি ল্যাপ্টপ চালাও। ফটোশপ খোলো। প্রেসক্রিপশন বানাতে হবে। ম্যাডাম চেয়েছেন। মনে হচ্ছে হাত খুলবে।
ওয়াটস্যাপঃ
- দিদি এই দেখো।
- দেখলাম। কোন ডাক্তার দেখছে?
- আর এন টেগরে দেখাচ্ছি।
- ব্যাঙ্ক ডিটেল একই আছে?
- হ্যাঁ দিদি।
- কত লাগবে?
- সাড়ে সাত লাখ দিদি।
-পাঠিয়ে দিচ্ছি।
- দিদি তোমার কাছে চির কালের জন্য কেনা হয়ে রইলাম। তুমি প্রাণে বাঁচালে আমাদের।
- অনেক হয়েছে। থাক। আর ফোন করো না।
- হেহে, সাড়ে সাত ক্রেডিটেড। কাল সক্কালে বুড়োর সাথে কথা বল। লোন স্যাঙ্কশন লেটারটা চাই যত শিগগিরি পার।
- হুম। চল সেলিব্রেট করি। চিলি চিকেন আনাই।
- ইল্লি? আমার না হার্টের ব্যামো?
- এই দেখো দেখো, চিড়িয়া ফেসবুকে কি লিখেছে! " কে জানে এবারও ভালবাসার কি মূল্য দিতে হবে।"
- কে মৌ?
- আবার কে! তাতে আবার লাইকের বন্যা বয়ে চলেছে।
- দাঁড়াও দেখি আমিও একটা কমেন্ট করে দিই। এ-ই দিলাম! দেখো।
- " পৃথিবী তে এখনো পুরো অন্ধকার হয়ে যায়নি মৌ।" হুহ! আদিখ্যেতা!!!!
- শুধু ভাবছি, মৌ এতটা ভালোবাসতো আমায়? সামনের জন্মে এর প্রতিদান দিতে হবে বুঝলে দীপু। এই জন্মে শালা হারামি হয়েই রয়ে গেলাম।
*************************************************************************************
- সিদ্ধার্থ বাবু নমস্কার।
- ও দীপান্বিতা ম্যাডাম। নমস্কার। বলুন।
- আমাদের ব্যাঙ্ক লোন এপ্রুভড। ব্লু প্রিন্টও রেডি। কবে নাগাদ দেখা করা যাবে বলুন?
- ভালো কাজে দেরী করে লাভ নেই। আজ তাহলে চারটে নাগাদ বসা যাক? আপনাদের অফিসে আসি?
- হ্যাঁ বেশ তো। চলে আসুন। আর হ্যাঁ, ডকুমেন্ট নিয়ে আসবেন সব। সই সাবুদ হয়ে যাবে।
- ঠিক আছে। দেখা হচ্ছে বিকেলে। নমস্কার।
***********************************************************************************
- যাক দীপু, ডিলটা তাহলে শেষমেশ ফাইনাল হল। একাউন্টেও এডভান্স ২০ লাখ এসে গিয়েছে।
- শোনো তুমি এখুনি কাজারিয়াদের কাছে যাও। আগে ফ্ল্যাট বুক করো। আমার কিন্তু সাউথ ফেসিং পেন্ট হাউসটা চাই-ই চাই।
- সব হবে সোনা। আমি যাচ্ছি। আজই টাকাটা দিয়ে আসছি।
- লাভ ইউ।
- মি টু।
************************************************************************************
(দুইদিন বাদে। )
- শৌণক সাংঘাতিক কেস হয়ে গিয়েছে।
- কি হয়েছে?
- তুমি এখুনি স্টার আনন্দ খোলো। আমাদের ব্যাঙ্কে বিরাট পুলিশি রেড হয়েছে। অনেক অফিসিয়াল নাকি গ্রেপ্তার।
- সে কি? বুড়োও নাকি?
- তা আমি জানিনা। এবার কি হবে?
- দাঁড়াও আমি খোঁজখবর নিই।
- কি হবে এবার শৌণক?
- যদি বুড়ো ফাঁসে তো আমরা শেষ। লোন নিয়ে সমস্যা হয়ে যাবে। দাঁড়াও দীপু, আমি জানাচ্ছি।
************************************************************************************
- হুম, বুড়ো গ্রেপ্তার। ব্যাঙ্কে নতুন লোক সেকশন ইন চার্জ হয়েছে। সে নাকি সমস্ত খুঁটিয়ে দেখবে, বহু লোন ক্যান্সেল হবে।
- হায় ভগবান।
- আর ভগবান ভগবান করে কি হবে। দেখা যাক কি আছে কপালে। কি আবার ইমেল এলো দেখি।
- দীপু, যা সন্দেহ করেছিলাম, ঠিক তাই। ব্যাঙ্কের ইমেল। হার্ড কপি শিগগিরি আসবে। শোনো কি লেখা।
Dear Mr. Sounak Basu
With great regret we inform you that your previously sanctioned loan amount of Rs. 1 crore has been cancelled as of now due to legal issues. Sorry for the inconvenience.
Thanks
Koushani Mukhopadhyay
General Manager (Finance)
- কৌশাণি দিদি?
- ইয়েস।
- ও মাই গড! এই রকম ভাবে একটা ধাক্কা দিল??
- এইবারে?
- শোনো সিদ্ধারথ বাবুকে তো টাকাটা এখুনি ফেরত দেওয়া যাবেনা। হাতে কিচ্ছুটি নেই। কোনভাবে দুটো মাস কাটাতে হবে। Meanwhile আমি অন্যও কোন ব্যাবস্থা দেখছি। পিয়ালী, সোমা আমায় ভালোবাসে কিনা দেখি। তোমার কোন নাগর পাও কি খোঁজো।
*************************************************************************************
(মাস খানেক পরের ঘটনা )
- নমস্কার দীপান্বিতা দেবী। আমি সিদ্ধারথ বলছি।
- হ্যাঁ বলুন।
- আচ্ছা কাজ কিরকম চলছে? একটা আপডেট চাই যে।
- হ্যাঁ সে ভালোই চলছে।
- তাহলে আজ একবার আসুন আমাদের অফিসে? আমার বস ও থাকবেন। ওনার সামনেই একটা প্রেজেন্টেশন দেবেন।
- আচ্ছা আমি এক ঘণ্টার মধ্যে জানাচ্ছি।
- ধন্যবাদ।
**************************************************************************************
- কি হবে এবারে? বস নাকি আপডেট চেয়েছে। কি বলব?
- দেখো বলতে তো হবেই। চাইলে আর একটু এডভান্স জোগাড় করতে হবে। আমি ম্যানেজ করব। তুমি টাইম ফিক্স করো দীপু।
*********************************************************************************************************
- এত জায়গা থাকতে গলফ গ্রীন সি সি ডি?
- তাতে কি হয়েছে?
- কিছুই না। ভালোই হবে। রাস্তায় মৌয়ের বাড়িটা পড়বে। দেখিয়ে দেবো। আমাদের সোনার মুর্গির ডেরা।
- ওসব পরে হবে শৌণক। আগে মিটিং ঠিকঠাক চলুক। আমার নার্ভাস লাগছে।
****************************************************************************************************************************************************
- আসুন শৌণক বাবু, আসুন দীপান্বিতা ম্যাডাম। বসুন। ব্লু লেগুণ বলি আপনাদের জন্য?
- তাড়া কিসের? আপনার বস আসুক। তারপরে একসাথে।
- বস আসছেন বলে। কাছেই আছেন।
- আচ্ছা। উনি আসুন।
- শৌণক দীপান্বিতা কেমন আছ? হার্টের অবস্থা ভালো?
- মৌ তুমি?
- হ্যাঁ, আমি। তোমার হার্টের অবস্থা কেমন বললে না যে?
- হুম ঠিক আছি।
- ঠিক থাকতেই হবে। কারণ এখন যা যা কথা তোমায় বলব, তা নিতে এবশ মজবুত একটা হৃদযন্ত্র লাগবে।
- মানে?
- মানে আর কি?এতদিন ধরে, to be precise, last 75 days ধরে ঠিক যা যা ঘটেছে, মানে নিতাই দার তোমার বৌয়ের সাথে দেখা করা থেকে শুরু করে এই মুহূর্তে সি সি ডি তে আমাদের দেখা হওয়া, পুরোটাই আমার orchestrated। যে K M World এর সাথে কোটি টাকার ব্যাবসা করার রঙিন স্বপ্ন তুমি দেখছিলে, আমি সেই K M Worldএর কর্ণধার। বাবার ব্যাবসাটা এখন অনেক বড় হয়েছে। ট্রাভেল ছাড়াও আমরা অনেক কিছুই ডিল করি। তা ছাড়া ব্যাঙ্কের চিঠিতে নিশ্চয়ই দেখেছ? এই ব্যাঙ্কের GMও বটে।
- কি হল? এইটুকুতেই চুপ করে গেলে?
- তুমি কি বদলা নিচ্ছ মৌ?
- এখনো তো আমার কথাই শেষ হল না। আরও বাকি আছে।
- আর কি বাকি?
- কিছুই তো করিনি। এবার করব। সিদ্ধারথ চিঠিটা বের করো।
- শৌণক এই নাও। টারমিনেশন লেটার। তোমাদের কোম্পানির সাথে আমাদের ডিলটা ক্যান্সেল করলাম। আর এর সাথে সাথেই এডভান্সের কুড়ি লাখ আর আমার থেকে পারসোনালি যে সাড়ে সাত লাখ নিয়েছিলে, সেইগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেবে।
- মৌ প্লীজ। এরকম করো না প্লীজ। আমি ডুবে যাব।
- আমার কথা শেষ হয়নি। গত বছর আমার থেকে যে আঠারো লাখ টাকা নিয়েছিলে, সেইটা within the next two months আমার ফেরত চাই। নইলে তোমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা নিতে বাধ্য হবো। ভুলে যেয়ো না আমার কাছে সমস্ত চ্যাট, ব্যাঙ্ক ট্রান্সাকশন প্রুফ রয়েছে। কৌশাণি বার বার ঠকে না। অনেক নাটক তো করেছও, পড়েছ। এটা জানো না? “Heaven has no rage like love to hatred turned / Nor hell a fury like a woman scorned.”
****************************************
No comments:
Post a Comment