Saturday, June 22, 2019
তুয়ার হিজিবিজি ১৪
আজ লক্ষ্মীদি ছুটি নিয়েছে। অগত্যা নিজের ডিনারের ব্যবস্থা তুয়াকে নিজেকেই করতে হবে। বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে তো তুয়া এক্কেবারে ভিজে স্নান হয়ে গেছে। ঝটপট গিজার চালিয়ে গরম জলে স্নান করে শুকনো জামাকাপড় পরে প্রথমেই গরম গরম এক কাপ কফি বানালো নিজের জন্য। আহ। এই এতক্ষণে আরাম। ডিনারে কী বানানো যায়? ফ্রিজ খুলে দেখলো তুয়া, চিকেন আছে। আছে কিছু সবজি। কিছুদিন আগে শপিং মল থেকে থাই কারি মসলা কেনা ছিল। ব্যস। আর তো কোনো কথাই নেই। দৌড়ে রান্নাঘরে ঢুকলো। সাথে ফোন। গিনীকে আজকে একবার ফোন করতেই হবে। সারাক্ষণ ওর পিছনে লাগে, কাউকে দেখেই মনের ভিতর নাকি তুয়ার আলোড়ন জাগে না। হুহ। আজ বলতে হবে ওকে। তুয়ারও আর পাঁচটা মেয়ের মতোই "মনমে লাড্ডু" ফুটেছে।
ওয়াটসআপে ভিডিও কল চলতে থাকে দুই প্রাণের বন্ধুর। দু'পক্ষই ভারী উত্তেজিত। মকবুল মকবুল মকবুল। কথায় কথায় তুয়া মকবুল এই বলেছে, মকবুল ওই বলেছে। আজ এই রঙের পোশাকে কী অসাধারণ লাগছিলো। কাল তুয়ার কুর্তি আর মকবুলের টিশার্টের রঙ ম্যাচ করে গিয়েছিল।
গ্যাসে থাই কারি ফুটতে থাকে। দারুণ তার গন্ধ। পাশে রাইসকুকারে ভাত হতে থাকে। আর ওদিকে ফোনে ফোনে রান্না হতে থাকে এক মিষ্টি গল্প। গিনি খুব খুশি তুয়ার জন্য। ক্লাস ইলেভেনে পড়াকালীন সন্দীপনের সাথে তুয়ার মাস ছয়েকের সম্পর্কটা ভেঙে গিয়েছিল বিশ্রীভাবে। তারপর অনেকদিন তুয়া সারাক্ষণ মনমরা হয়ে থাকতো। আর পাঁচটা ওই বয়সী মেয়ের মতো এইসব বিষয়ে আর কোনো উচ্ছ্বাস নেই। মাথাব্যথা নেই। হেলদোল নেই। কেমন যেন একটা গুটিয়ে রেখেছিল ও নিজেকে। তারপর আবার যে মকবুল নামের এই প্রতিবেশী দেশের যুবক তুয়ার মনে একটা আন্দোলন তুলেছে, এটাই একটা বিরাট 'স্টেপ ফরওয়ার্ড'। আদৌ দুজনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক হবে কি না আগামীদিনে, হলেও তা কতদিন টিকবে, কী বৃত্তান্ত, কিছুই এখন ঠিক নেই। এমনকি ঠিক হওয়ার মতো পরিস্থিতিও না। সবই এখন খুবই কুড়ির অবস্থায়। ফুল ফুটতে, বসন্ত আসতে, ঢের দেরি। কিন্তু তাও, বন্ধুর এই আনন্দে, সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে বসে গিনি আজ খুব খুশি। অনেকদিন পর।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment