Sunday, June 23, 2019

তুয়ার হিজিবিজি ১৬

অনুষ্ঠানের দিন সকাল সকাল যদিও দুদিন আগের বৃষ্টির ফলে নাক সুড়সুড় আর গলা ব্যথা করছিল, তবুও স্টেজে উঠে তুয়া খুব ভালো গান গাইলো। এবং স্বপ্নের মতো স্ট্যান্ডিং ওভেশন না পেলেও, শ্রোতারা যে খুবই উপভোগ করেছে ওর গান, তা বলাই বাহুল্য। আজ গান গাইতে গাইতে বারবার তুয়ার চোখ চলে যাচ্ছিল একদম সামনের সারিতে বসা মকবুলের দিকে। গোটা সময়টাই এক জোড়া মুগ্ধ চোখ ওকে যেন আজ ভীষণ রকমের সাহস জুগিয়ে চলছিল প্রতি মুহূর্তে। অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন হলো। তারপর প্রথামতই শুরু হলো ডিজে নাইট। তুয়া আর ওর ব্যাচের বন্ধুরা, বাকি সিনিয়র-জুনিয়ররা সক্কলে ডান্স ফ্লোরে। কিছু কিছু স্যার ও ম্যাডামরা যোগ দিলেন খানিক। মকবুলকেও ডেকে নিলেন হৈমন্তী ম্যাম। মকবুল শুরুতে একটু ইতস্তত করলেও নাচতে শুরু করে যেন অন্য গ্রহের মানুষ। অন্য পারসোন্যালিটি।
তুয়ার ক্লাসের বাকি মেয়েরা তো সুযোগ খুঁজছিলই। এবার যেন মকবুলকে ডান্স ফ্লোরে পেয়ে হাতে চাঁদ এসে গেলো। সবাই একদম ওকে ছেঁকে ধরে নাচতে লাগল। ইলেক্ট্রনিক মিউজিকের মাতাল করা তাল, ছন্দ। মায়াবী আলো। ঝলমল। গ্ল্যামার। তুয়া একটু ইন্ট্রোভারট। তাই অতটা মকবুলের কাছ ঘেঁষছিল না। কিন্তু মকবুল যেন সুযোগ খুঁজে খুঁজে নানান বাহানায় নানান অছিলায় বারবার তুয়ার দিকেই আসছিল নাচের সময়ে। মন্দ যে লাগছিল না তুয়ার, তা ঠিক। কিন্তু একটু আড়ষ্টতা ছিলই। প্রচুর সেলফি উঠলো। বেশিরভাগেই অবশ্য দেখা যাবে, তুয়া আর মকবুল প্রায় পাশাপাশি। মকবুল সকলকে বলল, ওয়াটসআপে সেসব ছবি ওকে পাঠাতে। ফেসবুকেও ট্যাগ করে দিতে। মেয়েদের যেন একদিনে সব স্বপ্ন পূরণ। ফোন নম্বর পেয়ে গেলো। ফেসবুকের বন্ধুত্বও।
তুয়ার বাড়ি ফেরার কারফ্যু থাকে। ও তাই আটটার দিকেই বেরিয়ে পড়ল। ক্লাসমেট সুনন্দ ওর সাথেই বেরোল। একটু এগিয়ে দেবে বলে। সুনন্দ ক্লাসের "বেস্ট ফ্রেন্ড" তুয়ার।
বাড়ি ফিরে তাড়াহুড়ো করে পোশাক পরিবর্তন করে তুয়া ফেসবুক খুলল। নোটিফিকেশন এসছে। মকবুল সিদ্দিকি ওর ফ্রেন্ড রিক্যুএস্ট গ্রাহ্য করেছে। বুকের ভিতরে ঝড় উঠলো তুয়ার। ঠিক যেমন বাইরেও উঠেছে।

No comments:

Post a Comment